Tuesday, June 11, 2013

বিশ্বব্যাপি গোপন মার্কিন নজরদারির তথ্য ফাঁস

বিশ্বব্যাপি গোপন মার্কিন নজরদারির তথ্য ফাঁস


মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ'র একজন সাবেক কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ সম্প্রতি বহু গোপন তথ্য ফাঁস করে দেবার পর মার্কিন বিচার বিভাগ এক তদন্ত শুরু করেছে।


এডওয়ার্ড স্নোডেন নামে ২৯ বছর বয়স্ক ওই কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ স্বত:প্রণোদিতভাবেই এই তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি যা করেছেন তাকে বলা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গোপনীয়তা ভঙ্গের সবচেয়ে বড় ঘটনাগুলোর অন্যতম হিসেবে।
তিনি বলছেন যে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশ্বজুড়ে একটি অত্যন্ত গোপন নজরদারির ব্যবস্থা পরিচালনা করছিল। এর আওতায় প্রতিদিন সারা পৃথিবী জুড়ে লক্ষ লক্ষ ফোন, ইমেইল এবং অন্যন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে যে বার্তা বিনিময় হচ্ছে ওপর নজর রাখা হতো। আমেরিকানরা এখন এ কথা স্বীকার করেছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিচালক জেমস ক্ল্যাপার বলেছেন এই ফাঁসের ঘটনা তার দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এক গুরুতর ক্ষতি এবংেএ ব্যাপারে ফৌজদারি তদন্ত শুরু হচ্ছে।

ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক ভিডিওতে মি. স্নোডেন বলছেন, আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সরকারের ক্ষমতা ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলছিল।
CIA secret program leaked out

তিনি বলেন, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা এজেন্সি আরো কয়েকটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে এমন এক অবকাঠামো গড়ে তুলেছিল যে তারা যে কারো ইমেইল, মোবাইলে কথাবার্তা, পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য - সবকিছুই জানতে পারতো।

এনএসএ বিভিন্ন ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানের সার্ভার ট্যাপ করতো যার মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, গুগল, মাইক্রোসফট, ইউটিউব, স্কাইপ, এ্যাপল, এবং ইয়াহু। প্রিজম নামে একটি প্রোগাম দিয়ে অনলাইনে যত রকম যোগাযোগ, কথাবার্তা, ফাইল বিনিময় হচ্ছে তার ওপর নজরদারি করতো। এসব তথ্য বিদেশীদের গতিবিধি জানার জন্য ব্যবহৃত হতো - যারা সন্ত্রাসবাদ বা গুপ্তচরবৃত্তির সাথে জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়।

তিনি আরো বলেন, তিনি তাদেরকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, ইন্টারনেটের স্বাধীনতা এবং মৌলিক স্বাধীনতা ধ্বংস করতে দিতে চান নি বলেই এ কাজ করেছেন। প্রেসিডেন্ট ওবামা যে এ ব্যাপারে কিছুই করেন নি তা নিয়েও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

প্রেসিডেন্ট ওবামা গত বুধবার বলেন, মার্কিন জনগণকে সন্ত্রাসবাদের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য ব্যক্তিগত গোপনীয়তা যতটুকু লংঘিত হয় ততটুকুই তারা করেছেন এবং এর পরিমাণ খুব বেশি নয়। এ ব্যাপারে এফআইএসএ নামে একটি গোপন আইনও করা হয়েছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের সময়, যার আওতাতেই এগুলো করা হচ্ছে।

এর মধ্যে দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথ্য সংগ্রহের জন্য যে কর্মকান্ড পরিচালনা করছে - তার ব্যাপকতা প্রকাশ পাবার পর এ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

মি. স্নোডেন বলেন, তিনি মনে করেন যে মার্কিন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং তিনি বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করে এমন যে কোন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করবেন।


ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গোপন নজরদারি সংক্রান্ত নিজ দেশের কঠোর আইন এড়াতে আমেরিকানদের দেয়া তথ্য ব্যবহার করেছে - এমন অভিযোগের ব্যাপারে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ আজ পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখবেন বলেও জানা গেছে।
BBC Bangla Update @  
সর্বশেষ আপডেট সোমবার, 10 জুন, 2013 10:49 GMT 16:49 বাংলাদেশ সময়
LINK

No comments:

Post a Comment