Thursday, July 25, 2013

শয়তানের প্রপৌত্রের বিস্ময়কর ঘটনা


হযরত উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাথে ‘তিহামা’র পাহাড়গুলির মধ্যে একটি পাহাড়ে বসে ছিলাম। এমন সময় হাতে লাঠি নিয়ে এক বৃদ্ধ আমাদের সামনে এল এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে সালাম জানাল। তিনি সালামের জবাব দিয়ে তার ভাষাতেই তাকে প্রশ্ন করলেন, তুমি কে? সে বলল, ‘আমি হামাহ্ বিন হাইম বিন লাকীস বিন ইবলীস।’
নবীজী বললেন, তোমার আর ইবলীসের মধ্যে তাহলে শুধু দুই পুরুষের ব্যবধান। আচ্ছা, তুমি কত যুগ পার করেছ? সে বলল, আমি দুনিয়ার আয়ু শেষ করে ফেলেছি। কেবল সামান্য কিছু বাকি আছে। কাবীল যখন হাবিলকে হত্যা করেছিল সেই সময় আমি ছিলাম কয়েক বছরের বাচ্চা। কথা বুঝতে পারতাম। ছোট ছোট পাহাড়ে, টিলায় লাফালাফি করতাম। খাবার খারাপ করে দিতাম। আত্নীয়তার সম্পর্ক ছিঁড়ে ফেলার হুকুম দিতাম। সেই সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন. ‘বিচ্ছেদ সৃস্টিকারী বৃদ্ধ এবং অলসতা সৃস্টিকারী যুবকের কাজ বড় জঘন্য।’

(সেই আগুন্তক বৃদ্ধ) বলে উঠল, আমাকে এ বিষয়ে মাফ করুন। আমি আল্লাহর কাছে তাওবা করেছি। আমি হযরত নূহ্ (আঃ)-এর সাথে তাঁর মসজিদে সেইসব লোকের সাথে ছিলাম যারা তাঁর কওমের মধ্য থেকে তাঁর প্রতি ঈমান এনেছিল। আমি সকল সময় হযরত নূহ (আঃ) কে আপন সম্প্রদায়কে দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার জন্যে তিরস্কার করতাম। শেষ পর্যন্ত তিনি স্বয়ং কেঁদে ফেললেন এবং আমাকেও কাঁদিয়ে ছাড়েন। তিনি বলেন, আমি যদি তোমার কথা শুনে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া ছেড়ে দেই, তাহলে লজ্জিত অবস্হায় পতিত লোকদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

আমি নিবেদন করেছিলাম, হে নূহ! আমি হলাম তাদের একজন, যারা কাবীল বিন আদম কর্তৃক ভাগ্যবান শহীদ হাবীলের হত্যাকার্যে শরীক ছিল। আপনি কি মনে করেন, আল্লাহর দরবারে আমার তাওবা কবুল হবে? তিনি বলেন, ওহে হামাহ্! পূণ্যের সংকল্প কর এবং দুঃখ-অনুতাপে ভেঙ্গে পড়ার আগে সৎকাজে লেগে যাও। আল্লাহ তাআলা আমার উপর যা অবতীর্ণ করেছেন, তাতে আমি পড়েছি, যে ব্যক্তি পুরোপুরি দ্বীনদারীর সাথে আল্লাহর পথে ফিরে আসে এবং তাওবা করে, আল্লাহ তার তাওবা কবুল করেন। ওঠো, উযূ করে দু’রাকাআত নামায পড়ো। সুতরাং তখনই আমি হযরত নূহের নির্দেশ অনুযায়ী আমল শুরু করি। অতঃপর তিনি আমাকে ডেকে বললেন, মাথা তোলো। তোমার তাওবা (কবুল হওয়ার খবর) আসমান থেকে নাযিল হয়েছে। সুতরাং আমি আল্লাহর ওয়াস্তে এক বছর যাবৎ সিজদায় পড়ে থাকলাম।

আমি হযরত হুদ (আঃ)-এর সাথেও সিজদায় শরীক ছিলাম, যখন তিনি আপন সম্প্রদায় কে সঙ্গে নিয়ে সিজদা করেছিলেন। তাঁকে আমি তাঁর অজ্ঞ সম্প্রদায়কে বারবার দ্বীনের দাওয়াত দেবার জন্য ভর্ৎসনা করতাম। শেষ পর্যন্ত আপন কওমের কথা ভেবে তিনিও কাঁদেন এবং আমাকে কাঁদান। আমি হযরত ইয়াকূব (আঃ)-এর সাথেও দেখা করতাম এবং হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর দরবারে বিশ্বস্ততার পদে আসীন ছিলাম।

হযরত ইলয়াস (আঃ)-এর সাথে উপত্যকায় সাক্ষাৎ করতাম এবং এখনও তাঁর সাথে দেখা করি।
[কারও কারও অভিমতে, ইলিয়াস ও খিযির (আঃ) এই উভয়ের রুহকে আল্লাহ তাঁর ইচ্ছানুসারে আকৃতি বদলানোর ক্ষমতা দিয়েছেন এবং বর্তমানেও তাঁদের রুহ কোন না কোন অলী, পুণ্যবান প্রমুখদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। - তাফসীরে মাযহারীঃ উদ্ধৃতি, মুজাদ্দিদে আলফে সানী (রাহঃ)]

হযরত মূসা (আঃ)-এর সাথেও আমার মুলাকাত হয়েছিল। তিনি আমাকে তাওরাত শিখিয়েছিলেন। এবং বলেছিলেন, যদি হযরত ঈসা (আঃ)-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়, তবে তাকে আমার সালাম বলবে। অতঃপর আমি হযরত ঈসা (আঃ)-এর সাখে সাক্ষাত করেছি এবং হযরত মূসা (আঃ)-এর সালামও তাঁকে জানিয়েছি।
হযরত ঈসা (আঃ) আমাকে বলেছিলেন, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সাথে যদি তোমার সাক্ষাত হয়, তবে তাঁকে আমার তরফ থেকে সালাম নিবেদন করবে। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) অশ্রু-সজল হয়ে গেলেন এবং তিনি কাঁদতে লাগলেন। তারপর বললেন, ঈসা (আঃ)-এর প্রতিও দুনিয়া থাকা পর্যন্ত সালাম শান্তি নেমে আসুক এবং হে হামাহ্, আমানত পৌঁছানোর জন্য তোমার প্রতিও সালাম। হামাহ্ তখন বলে, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি আমার সাথে তাই করুন, যা করেছিল হযরত মূসা বিন ইমরান (আঃ)।- তিনি আমাকে তাওরাত শিখিয়েছিলেন। তো রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাকে শিখালেন সূরা ওয়াকিয়াহ, সূরা মুরসালাত, সূরা নাবা, সূরা আত্-তাকভীর, সূরা ফালাক ও নাস এবং সূরা ইখলাস।


রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, হে হামাহ, আপন কাজের কথা আমাকে বল আর আমার সাথে সাক্ষাত করা ছেড়ে দিওনা। হযরত উমর (রাঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর ইন্তেকালের পর তার খবর আর আমরা পেলাম না। জানিনা সে জীবিত আছে না মারা গিয়েছে।

উল্লেখিত হাদীসটি ‘যাওয়াইদুয যুহদ’ গ্রন্হে হযরত আনাস (রাঃ)-এর বাচনিকে গ্রথিত করেছেন হযরত আব্দুল্লাহ বিন ইমাম আহমদ এবং এটি উল্লেখ করেছেন আক্কীলী (কিতাবুদ্ধ দ্বুআফা-য়), শিরাযী ( কিতাবুল আলকাবে), আবূ নূআইম (দালাইলে তথা ইবনে মারদুইয়াহ-ও। তাছাড়া এই বর্ণনাটি আল্লামা ফাকিহী কিতাবে মাক্কায় উদ্ধৃত করেছেন হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর বাচনিকে। হাদীসের কয়েকটি তরক রয়েছে। যার দরুণ এটি হাসান স্তরে পৌঁছায়।

{আল্লামা সূয়ূতী (রাহঃ)}
Post Link 

My Comment =====>>

হযরত মুসা আঃ যখন তুর পাহাড়ে আল্লাহর সাক্ষাতে যাচ্ছিলেন তখন ইবলিশ পথে তাঁর সাথে দেখা করে বলে তার মুক্তির কোন পথ খোলা আছে কিনা ------- এব্যাপারে আল্লাহর কাছে যেন তিনি প্রশ্ন করেন । নবী মুসা আঃ আল্লাহর সাথে কথা বলার সময় ইবলিশের উদ্বেগের কথা জানালেন । আল্লাহ বললেন --- আছে । মুক্তির পথ আছে । তা হল ---- আদমের কবরে গিয়ে সিজদা করা । নবী মুসা আঃ খুব খুশী । ইবলিশ মাত্র এক সিজদা করলেই তার নাজাত, সেই সাথে আদম সন্তানরাও তার খপ্পর থেকে বাঁচবে । ফিরতি পথে ইবলিশকে আল্লাহর পক্ষ থেকে সহজ সমাধানটি জানিয়ে দিলেন । ইবলিশ যখন শুনল আল্লাহর নির্দেশনা তখন সে বলল , যে আদমকে জীবিত থাকতে আমি সেজদা করলাম না , সে-ই আমি-ই কিভাবে মৃত আদমকে সেজদা করব ? ---------------- এভাবে-ই ইবলিশ শয়তান শয়তান-ই রয়ে গেল । 
শেষ রাসুল মুহাম্মাদ সাঃ এর সাথে একদা ইবলিশ দেখা করে ( আল্লাহর আদেশে ) ------ আসে পাশে সাহাবায়ে কেরাম ছিলেন । অনেক কথা হয় । শেষে নবীয়ে রহমতে আলম সাঃ তাকে তার নিজের মুক্তির কথা ভেবে দেখতে বলেন। ইংলিশে যে দীর্ঘ হাদীস পড়লাম তার অংশ বিশেষ এমন -----

the prophet Muhammed (p.b.u.h) told the Devil, 'O Father of All Bitterness, I wonder if it is at all possible for you to repent and return to your Lord. I promise I would intercede for you.'

"The Accursed One answered, 'O Messenger of Allah, it is Allah's justice. The ink on the pen, which wrote the judgment, is dry. What will happen until Doomsday. The One who made the master of all prophets, the speaker for the inhabitants of Paradise, the One who chose you to be the beloved amongst His creation, chose me to be the master of sinners and the speaker of the inhabitants of Hell. He is Allah. O Muhammad (peace be upon you), this which I have told you is my last word to you, and I have told nothing but the truth."

No comments:

Post a Comment